‘তাহলে কোনও প্রশ্ন আছে তোমাদের?’
বলামাত্র শব্দ ভেসে এল ভৌ ভৌ ভৌ।
আর বাকিটা চুপচাপ। কোথাও কোনও আওয়াজ নেই। চটপট জবাব দিলেন দীপ্তস্যার, ‘ওঃ, ভেরি গুড। খুব ভাল। কিন্তু প্রশ্নের এই উত্তরটা আমি জানি না রে’।
দু’চারটে খুক খুক। হিহিহিহি।
হয়তো কয়েকজন তাদের শব্দের বোতাম খুলে দিয়েছে। তাই শোনা গেল তাদের হাসির আওয়াজ। তা না হলে এইসব স্মার্ট ক্লাসরুমে ধরা যায় না, ছোঁওয়া যায় না, স্পষ্ট দেখাও যায় না। অথচ সবাই আছে। ‘শব্দের বোতাম’ কথাটা দীপ্তস্যারের নিজস্ব। এর মানে হল, কম্পিউটারে অনলাইন ক্লাস চলাকালীন কথা বন্ধ রাখার জন্য মাইক্রোফোন আনমিউট বা মিউট করে রাখার বাটন।
অনলাইন ক্লাস চলছে। করোনা ভাইরাসের দাপটে স্কুল-কলেজ সবই বন্ধ। কতদিনে চারপাশে কী ঠিক হবে জানা নেই। অন্তত মাসতিনেক স্কুল যে খুলবে না, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। ক্যালেন্ডারের হিসেবমতো কয়েকদিন পরে গরমের ছুটি শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এখন গরমই বা কী, আবার তার ছুটিই বা কোথায়? এই গত দু’মাস টানা ঘরবন্দী থেকে ছোটরা তিতিবিরক্ত। তার মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে অনলাইন ক্লাস।
দীপ্তস্যার অবশ্য খুব টেকস্যাভি। তিনি এই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেন। তার চেয়েও বড় কথা, তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয়। ‘নিউ গেটওয়ে’ স্কুলের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী একবাক্যে তাদের ফেভারিট টিচারের তালিকায় দীপ্তস্যারকে রাখবেই রাখবে। দীপ্তস্যার ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভ অবধি ভূগোল পড়ান। কিন্তু ভূগোলের মাস্টারমশাই বললে অনেক সময় যেরকম গুঁফো, কালো, মোটা ফ্রেমের পুরু চশমা, জোড়া ভুরু, অল্প টাকওলা রাশভারি গোছের চেহারা ভেসে ওঠে, দীপ্তস্যার মোটেই তেমন নন। তিনি ঝকঝকে স্মার্ট, তুখোড় কথা বলেন। ভূগোল পড়াতে পড়াতে বাংলা কবিতা, ইংরেজি গল্প, হিন্দি সিনেমার প্রচুর রেফারেন্সে ভরিয়ে দেন। আর সবথেকে বড় কথা, দুষ্টু ছেলেমেয়েদের প্রতি তাঁর অগাধ স্নেহ। নিজের ছেলেবেলার কথা মনে রাখেন বলেই বোধহয় ক্লাসে বকুনি দেওয়া তাঁর ধাতে নেই।
ক্লাস নাইন, সেকশন বি। ভয়ানক বিচ্ছু। এই ব্যাচটি ছেলেবেলা থেকেই খুব দুষ্টু। এই এপ্রিল মাসের নতুন সেশন থেকে তারা ক্লাস টেন। গত দু’তিন বছর ধরে এই ব্যাচের প্রায় সবার বিরুদ্ধে গোটা স্কুলের ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ। ইংরেজির অনুরূপা ম্যাম তো গত বছর একবার ভেবেছিলেন চাকরিটাই ছেড়ে দেবেন। তিনি ক্লাসটিচার। অত্যন্ত নিরীহ শান্ত ভালোমানুষ। রোজ ফার্স্ট পিরিয়ডে ক্লাস নাইন বি-এর ক্লাসে ঢুকতে হবে ভেবে এক-একদিন তাঁর রাতে ঘুম আসত না। ক্লাসে ঢুকলেই নিত্যনতুন বাঁদরামি। সব টিচাররা বিধ্বস্ত। কোথাও কিছু ঘটলেই, ওই তো নাইন বি। এদের সামলাতে পারতেন একা দীপ্ত স্যার।
নাইনের ক্লাস তখন সবেমাত্র শুরু হয়েছে। সপ্তাহদুয়েক হবে। দীপ্তস্যার ক্লাসে ঢুকলেন। সবাই শান্তশিষ্ট, গম্ভীর। কেউ ভাজা মাছটিও উলটে খেতে জানে না এমন হাবভাব। দীপ্তস্যার একবার আড়চোখে দেখে নিলেন। সব খবরাখবর নিয়েই এসেছেন তিনি। দুষ্টুর শিরোমণি তিনটি ছেলে তিন কোনায় বসেছে আজ। যে কোনও দিক থেকেই দুষ্টুমি শুরু হবে . . .
‘ওরে অনন্য, উঠে আয় বাবা’।
অনন্যর কাঁচুমাচু মুখ, ‘কেন স্যার? আমি আবার কী করলাম?’
‘আহাহা, তোদের মনের মধ্যে বড় অপরাধবোধ। আয় না বাবা . . .’
অনন্য চুপচাপ উঠে এল।
‘এই আমার সামনের বেঞ্চে বস’।
সামনের বেঞ্চ সবসময় ফাঁকা। প্রত্যেকের বক্তব্য চকের গুঁড়ো উড়ে আসে, অতএব ওখানে বসা যায় না। কিন্তু আসল বিষয় একটু গভীরে। এই ক্লাসে কেউ ফার্স্ট বেঞ্চ পছন্দ করে না। আর টিচাররাও অলিখিত নিয়ম করে দিয়েছেন, ফার্স্ট বেঞ্চে কে বসবে, সেটা প্রত্যেক ক্লাসে তাঁরাই নিজেরা এসে ঠিক করে দেবেন।
‘প্রমিত, আজ একটু সামনে বসবি? তোর মুখখানা ভাল করে দেখি’।
প্রমিত ছটফট করে উঠল। এর আগের পিরিয়ডেও তাকে বাংলাম্যাম ওইখানে বসিয়ে রেখে একগাদা লিখতে দিয়েছেন। যদিও এই দীপ্তস্যারকে নিয়ে তাদের প্রচুর আশা-ভরসা। উনি নাকি সকলের সঙ্গেই ভীষণ বন্ধুর মতো মেশেন। কিন্তু বছরের শুরুতে কয়েকদিন মাত্র গড়িয়েছে। এর মধ্যেই? ভুগোল বইয়ের তলায় আজ ওর আর প্রত্যয়ের একটা নতুন গেম খেলার প্ল্যান ছিল। খাতার মধ্যে সেইসব ছক কাটা হয়ে গিয়েছিল। ইস! পুরোটা মাঠে মারা গেল রে!
প্রমিত উঠে আসে। অনন্য আর প্রমিতকে একেবারে সামনের বেঞ্চে নিজের মুখোমুখি বসিয়ে তাদের হাতে দুটো সাদা কাগজ ধরিয়ে দেন দীপ্তস্যার। তারপর তাদের দুজনের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলেন, ‘আজ এই কাগজটায় তোরা কাটাকুটি, বুক-ক্রিকেট, হ্যা্ং-ম্যান— ওই যেসব গেম তোরা এখন ক্লাসে বসে খেলিস-টেলিস, সেগুলো খেলবি আর স্কোর লিখবি। কিন্তু একদম চুপচাপ। আর কেউ জানবে না। আমার সামনে বসে খেল, তাহলে আমিও মন দিয়ে পড়াতে পারব, তোরাও মন দিয়ে খেলতে পারবি, কেমন?’
অনন্য আর প্রমিত তো হতভম্ব। এসব কী হচ্ছে! ফার্স্ট বেঞ্চে বসে খেলবে? তাও আবার স্যারের চোখের সামনে? স্যার কিছুই বলবেন না? এমন আবার হয় নাকি? বাকি ক্লাস উসখুস করছে। স্যার নিশ্চই ওদের প্রচন্ড কঠিন কিছু লিখতে দিয়েছেন। ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। ক্লাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত . . .
দীপ্তস্যার পড়ানো শুরু করলেন। ক্লাইমেট অফ ইন্ডিয়া। ভারতের বিরাট ভৌগোলিক বিস্তার নিয়ে গল্পের মতো গুছিয়ে বলতে বলতে লক্ষ্য করলেন সবাই একটু একটু করে ক্লাসে মন দিচ্ছে। দীপ্তস্যার আড়চোখে দেখলেন ফার্স্ট বেঞ্চে বসে অনন্য আর প্রমিত সাদা কাগজে একটিও আঁচড় কাটেনি। কেমন একটু অপ্রস্তুত হয়ে বসে আছে দু’জন। দীপ্তস্যার জানেন, অমন হাঁ করে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ওরাও একটা সময় ভূগোলের গল্পে ঢুকে পড়বে। তাঁর উদ্দেশ্য সফল। এর পরের দিন অন্য বেঞ্চে বসে থাকলেও ওরা আর অমনোযোগী হবে না। দুষ্টুমি হয়তো করবে। কিন্তু তার জন্য শাস্তি দেওয়ার কোনও মানেই হয় না।
ক্লাস শেষ হবার পর দুজনের সামনে দাঁড়ান একবার। একটু অবাক হবার ভান করেন।
‘এ কী রে! তোরা দেখি কিছুই করিসনি! দেখ কাণ্ড! কোনও মানে হয়? যাঃ . . . পরের ক্লাসে তো আর এমন চান্স পাবি না’।
দুজনের মাথায় একটু হাত বুলিয়ে ক্লাস থেকে চলে যান দীপ্তস্যার। অনন্য আর প্রমিত ঘাড় হেঁট করে ভেবে নেয়, দীপ্তস্যারের ক্লাসে এবার থেকে ওরা দুষ্টুমি করবে না। ক্লাস নাইনে তারপরেও অবশ্য সারা বছরে দুষ্টুমির নজির রয়েছে প্রচুর। দীপ্তস্যারের ক্লাসে তুলনায় অনেক কম। বরং দীপ্তস্যারের ক্লাসে দুষ্টু ছেলেরা হাঁফ ছাড়ার সুযোগ পেত।
এমনভাবেই চলছিল।
মুশকিল হল এই অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ায়।
জুম অ্যাপে ক্লাস শুরু হয়েছে। নতুন অ্যাপ। বিষয়টা বুঝতে সকলেরই কিছুদিন সময় লেগেছে। কিন্তু দুষ্টুমি করার জন্য একেবারে আদর্শ। অডিও আর ভিডিও মিউট করে রাখলেই হয়। তারা শুনছে কী শুনছে না বোঝার কোনও উপায় নেই। হঠাৎ কোনওভাবে ভিডিও অন হয়ে গেলে দেখা যায় ছাত্র বা ছাত্রীটি বিছানায় শুয়ে, কেউ হয়তো গপ গপ করে খাচ্ছে কিছু। একদিন তো কার একটা প্রোফাইল থেকে হিন্দি গান বাজতে শুরু করল! বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার। কাকে কী বলবেন? দীপ্তস্যার লক্ষ্য করলেন, কোনও ছাত্র-ছাত্রী তার নিজের নাম নিয়ে ক্লাসে ঢুকছে না। এক-একজনের প্রোফাইলে এক-একরকম ছবি। স্ক্রিনে নাম ভেসে এল, কেল্টু। কিছুক্ষণের মধ্যেই এল, কেল্টুর মা। পরক্ষণেই কেল্টুর বাবা। দীপ্তস্যার একটু থমকে গেলেন। এখানে নিশ্চিত কোনও বোঝাপড়া আছে। পড়াতে শুরু করেই দেখলেন কেল্টুর ভাই বিল্টু আর কেল্টুর বন্ধু শান্টু হাজির হয়ে গেছে ক্লাসে।
স্যার গলাখাঁকারি দিয়ে বললেন, ‘কেল্টুর ফুল ফ্যামিলি ক্লাস টেনে পড়ছে দেখছি। বাঃ তা বেশ। বাবা কেল্টু ক্লাসে কিছু বুঝতে অসুবিধে হলে বাবা-মাকে জিগ্যেস করে নিও, কেমন?’
এবার একে একে ঢুকছে। ‘নাম জেনে কী হবে’, ‘আমি আগন্তুক’, ‘কানামাছি’, ‘পচা পান’, ‘করুণাময়ী’, ‘ঘোষপাড়ার বাবু’, ‘আমি ছাগল বলছি’, ‘আজ আমি ভগবান’!
এই অবধি তবু ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ একটি প্রোফাইলের নামে চোখ আটকে গেল। ‘গুদেতামা’। ভাল করে চোখ কচলে আবার পড়লেন। হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন। লেখা রয়েছে ‘গুদেতামা’! কিন্তু তার মানে কী? যাক গে। এটা নিয়ে পরে ভাবতে হবে।
এতদিন ক্লাসরুমে ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যেককে দেখা যেত। চোখের দিকে তাকালেই দিব্যি বোঝা যেত তাদের মন কোনদিকে উড়ে বেড়াচ্ছে। এখন এই অনলাইন ক্লাসে ভীষণ অসহায় অবস্থা! সব ছদ্মনাম! অন্য স্কুলে কোথায় কী অবস্থা কে জানে! আর যাই হোক, এমন সব আশ্চর্য নাম নিয়ে কেউ অনলাইন ক্লাসে আসে না। কিন্তু এখানে অদ্ভুতূড়ে কান্ড। আসলে ‘নিউ গেটওয়ে’ স্কুলের চিন্তাভাবনা বরাবরই অন্যরকম। তাই বোধহয় এতটা খোলামেলা পরিবেশে সকলে অবাধ স্বাধীনতায় বড় হয়ে উঠছে। কিন্তু স্কুলের নিয়মকানুন যা-ই হোক, ছেলেমেয়েদের দুষ্টুমি করার এইসব নিত্যনতুন পদ্ধতি দেখে দীপ্তস্যারও থমকে যাচ্ছেন। তিনি বেশ বুঝতে পারছেন, তাঁর ক্লাস চলাকালীন স্টুডেন্টরা এন্তার নিজেদের মধ্যে চ্যাটবক্সে গল্প করে চলেছে। কেউ মন দিচ্ছে কি না, বা শুনছে কি না, বোঝার কোনও উপায় নেই।
এর একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।
প্রিন্সিপালকে জানিয়ে লাভ নেই। ক্লাস টিচারকে জানিয়েও কোনও লাভ হবে না। এটা মারাত্মক কোনও অপরাধ নয়। মামুলি ব্যাপার। ইচ্ছে করলেই সকলকে নিজের নাম, রোল নম্বর দিয়ে প্রোফাইল বানাতে বলার জন্য নিয়ম চালু করাই যায়, সব স্কুলই তাই করছে। কিন্তু ওই নাম গোপনের মজাটুকুও দীপ্তস্যার দারুণ উপভোগ করেন।
অনলাইন ক্লাসের শেষে রোজ হোম ওয়ার্ক দেবার পালা। আজও তার ব্যতিক্রম হল না। হঠাৎ দীপ্তস্যার দেখলেন ‘গুদেতামা’ লিখছে, স্যার, পরশুর ক্লাসেই কি আপনি পড়া ধরবেন?
স্যার বললেন, ‘ওরে, তোর অডিও চালু কর। তারপর বল কী বলছিস। অমন মেঘের আড়ালে থাকলে বড় ভয় করে যে’।
এক মুহূর্তে অডিও অন। ভিডিও বন্ধ। যে বলছে, দেখা যাচ্ছে না তাকে।
‘স্যার’ . . . একটি গম্ভীর গলা। গলা শুনে কিশোর কন্ঠ নয় বলেই মনে হল।
‘স্যার, বলছিলাম কি আপনি পরশু পড়া ধরবেন বলছেন . . .’
‘হ্যাঁ, সেইরকমই তো ইচ্ছে আছে’।
‘না মানে, অনন্য তো একদিনও ক্লাস করেনি। আমিই ল্যাপটপ খুলে অফিসের কাজ করতে করতে . . .’
বলতে বলতেই ‘গুদেতামা’র ভিডিও অন হয়ে গেল। একজন কাঁচাপাকা চুলের ভদ্রলোকের দুষ্টুমিমাখানো হাসিমুখ। তিনি কিছুতেই ক্লাস টেনের ছাত্র হতে পারেন না . . .
‘নমস্কার স্যার। আমি অনন্যর বাবা’।
দীপ্তস্যার এতটা আশা করেননি। অপ্রস্তুত হওয়ার একটা সীমা আছে!
‘অনন্য তো একটাও ক্লাস করেনি। স্কুলের সব ক্লাসই ও অন করে দিয়ে চলে যায় . . . সোফায় শুয়ে গল্পের বই-টই পড়ে। আমিই আপনাদের ক্লাস শুনি। বেশ ভাল লাগে স্যার। কতকাল পরে আবার ক্লাসে বসে পড়া শুনছি। যেন ছেলেবেলা ফিরে এল! তবে কী জানেন তো, পড়া-টড়া ধরলে বেশ চাপে পড়ে যাব। তাই জিগ্যেস করলুম’।
দীপ্তস্যার একটু হতভম্ব হয়ে গেলেও চটপট সামলে নেন নিজেকে।
‘আহা, বেশ ভাল লাগল আপনার সঙ্গে এই সূত্রে আলাপ হয়ে . . . আপনাকে আর পড়া জিগ্যেস করে কী হবে? জানা রইল। আপনি রোজ শুনবেন বরং। আমি ঠিক জানি, অনন্যর পড়তে ইচ্ছে করলে পরে বুঝে নেবে। আচ্ছা স্যার . . .’ হঠাৎ যেন মনে পড়ে গেছে দীপ্তস্যারের . . . ‘এই গুদেতামা শব্দটির মানে কী? একটু বলবেন?’
‘গুদেতামা একটি জাপানি শব্দ স্যার। এটি একটি জনপ্রিয় জাপানি কার্টুন ক্যারেকটার। আমি আসলে একটু ভাষাচর্চা করি, তাই’।
‘ও! তা’ এর মানে কী?’
‘গুদেতামা শব্দের মানে হল লেজি এগ . . . বাংলা করলে দাঁড়ায় অলস ডিম। আসলে কার্টুনের ওই চরিত্রটি এত অলস . . . একেবারে ল্যাতপ্যাতে হাফবয়েল ডিমের কুসুমের মতো’।
দীপ্তস্যারের গলা থেকে একটাও শব্দ বেরল না। ভাবলেন, নাম-মাহাত্ম্য নিয়ে আজই একটা জম্পেশ গল্প লিখতে হবে। বাবা অনলাইন ক্লাস করেন, আর সোফায় শুয়ে ছেলে গল্পের বই পড়ে। কার্টুন ক্যারেকটারই বটে। মোক্ষম নাম।