Categories
পুরনো পরগণা |

টুনটুনি আর বিড়ালের কথা

1401 |
Share
| ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

১৮৬৩-১৯১৫। বাংলা শিশুসাহিত্যের স্তম্ভ। লেখক, চিত্রকর, বিজ্ঞানী, সংগীতজ্ঞ এবং মুদ্রণশিল্পে অগ্রণী গবেষক। 'সন্দেশ' পত্রিকা প্রকাশ করেন ১৯১৩ সালে।

অলংকরণ: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

গৃহস্থের ঘরের পিছনে বেগুন গাছ আছে৷ সেই বেগুন গাছের পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে টুনটুনি তার বাসা বেঁধেছে৷ বাসার ভিতরে ছোট্ট-ছোট্ট ছানা হয়েছে৷ খুব ছোট্ট ছানা, তারা উড়তে পারে না, চোখও মেলতে পারে না৷ খালি হাঁ করে, আর চিঁ-চিঁ করে৷

গৃহস্থের বিড়ালটা ভারি দুষ্টু৷ সে খালি ভাবে, ‘টুনটুনির ছানা খাব৷’ একদিন সে বেগুন গাছের তলায় এসে বললে, ‘কী করছিস লা টুনটুনি?’

টুনটুনি তার মাথা হেঁট করে বেগুন গাছের ডালে ঠেকিয়ে বললে, ‘প্রণাম হই মহারানী!’

তাতে বিড়ালনী ভারি খুশি হয়ে চলে গেল৷

এমনি সে রোজ আসে, রোজ টুনটুনি তাকে প্রণাম করে আর মহারানী বলে, আর সে খুশি হয়ে চলে যায়৷

এখন টুনটুনির ছানাগুলি বড় হয়েছে, তাদের সুন্দর পাখা হয়েছে৷ তারা আর চোখ বুজে থাকে না৷ তা দেখে টুনটুনি তাদের বললে, ‘বাছা, তোরা উড়তে পারবি?’

ছানারা বললে, ‘হ্যাঁ মা, পারব৷’

টুনটুনি বললে, ‘তবে দেখ্‌ তো দেখি, ঐ তালগাছটার ডালে গিয়ে বসতে পারিস কি না!’

ছানারা তখনই উড়ে গিয়ে তালগাছের ডালে বসল৷ তা দেখে টুনটুনি হেসে বললে, ‘এখন দুষ্টু বিড়াল আসুক দেখি!’

খানিক বাদেই বিড়াল এসে বললে, ‘কী করছিস লা টুনটুনি?’

তখন টুনটুনি পা উঠিয়ে তাকে লাথি দেখিয়ে বললে, ‘দূর হ, লক্ষ্মীছাড়ী বিড়ালনী!’ বলেই সে ফুড়ুক করে উড়ে পালাল৷

দুষ্টু বিড়াল দাঁত খিঁচিয়ে গাছে উঠে, টুনটুনিকেও ধরতে পারল না, ছানাও খেতে পেল না৷ খালি বেগুন কাঁটার খোঁচা খেয়ে নাকাল হয়ে ঘরে ফিরল৷

পুরনো বানান অপরিবর্তিত