Categories
পুরনো পরগণা |

সর্প ও কৃষক

683 |
Share
| ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

১৮২০-১৮৯১। বাঙালি জাতির শিক্ষক। আধুনিক বাংলা ভাষার প্রথম রূপকার। দয়ারসাগর।

গ্রাফিক্স: কমলাকান্ত পাকড়াশী; চিত্র তথ্য: ১৮৮৫ সালে মুদ্রিত কথামালার প্রচ্ছদের অংশবিশেষ; চিত্র সৌজন্য: Wikipedia

শীত কালে, এক কৃষক, অতি প্রত্যুষে, ক্ষেত্রে কর্ম করিতে যাইতেছিল; সে দেখিতে পাইল, এক সর্প, হিমে আচ্ছন্ন ও মৃতপ্রায় হইয়া, পথের ধারে পড়িয়া আছে। দেখিয়া, তাহার অন্তঃকরণে দয়ার উদয় হইল। তখন সে ঐ সর্পকে উঠাইয়া লইল, এবং, বাটীতে আনিয়া, আগুনে সেঁকিয়া, কিছু আহার দিয়া, তাহাকে সজীব করিল। সর্প, এই রূপে সজীব হইয়া উঠিয়া, পুনরায় আপন স্বভাব প্রাপ্ত হইল, এবং, কৃষকের শিশু সন্তানকে সম্মুখে পাইয়া, দংশন করিতে উদ্যত হইল।

কৃষক দেখিয়া, অতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়া, সর্পকে সম্বোধন করিয়া কহিল, অরে ক্রূর! তুই অতিশয় কৃতঘ্ন। তোর প্রাণ নষ্ট হইতেছিল দেখিয়া, দয়া করিয়া, গৃহে আনিয়া, আমি তোরে প্রাণদান করিলাম; তুই, সে সকল ভুলিয়া গিয়া, আমার পুত্রকে দংশন করিতে উদ্যত হইলি। বুঝিলাম, যাহার যে স্বভাব, কিছুতেই তাহার অন্যথা হয় না। যাহা হউক, তোর যেমন কর্ম, তার উপযুক্ত ফল পা। এই বলিয়া, কুপিত কৃষক, হস্তস্থিত কুঠার দ্বারা, সর্পের মস্তকে এমন প্রহার করিল যে, এক আঘাতেই তাহার প্রাণত্যাগ হইল।

পুরনো বানান ও ভাষা অপরিবর্তিত; বিদ্যাসাগর রচনা সংগ্রহ, বিদ্যাসাগর স্মারক জাতীয় সমিতি