রাশিয়ার বিতর্কিত ধর্মগুরু রাস্পুতিন নিজের মৃত্যু সম্বন্ধে লিখেছিলেন রাশিয়ার রানি আলেকজান্দ্রাকে একটি চিঠিতে। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ‘আমার মৃত্যুর কারণ যদি আপনার আত্মীয়স্বজনের মধ্যে থেকে কেউ হয়, তাহলে আপনার পরিবারের কেউ, অর্থাৎ, আপনার সন্তানেরা বা তাদের আত্মীয়রা কেউ দুবছরের বেশি বাঁচবে না। . . . আমার মৃত্যু হবেই। আমি জীবিতদের মধ্যে আর নেই . . .’ । রাস্পুতিন খুন হন ১৯১৬ সালে। অদ্ভুতভাবে রাস্পুতিনের মৃত্যুর দুবছরের মধ্যে, অর্থাৎ, ১৯১৮ সালে বলশেভিক বিপ্লবীদের হাতে রাশিয়ার রোমানভ রাজপরিবারের প্রত্যেকে মারা যান।
তবে ১৯১৬ সালে, রাস্পুতিনকে খুন করার চক্রান্ত করে রাজকুমার ইউসুপভের প্যালেসে ডাকা হয়। তাঁকে সায়্যানাইড মেশানো খাবার খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বিষমিশ্রিত খাবার খেয়েও রাস্পুতিন ঠিক থাকেন। এতে রাজকুমার ইউসুপভ ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্পুতিন গুলি করেন। রাস্পুতিন মাটিতে পড়ে যান নিথর হয়ে। সবাই যখন ধরে নিয়েছে যে তিনি মারা গেছেন, তিনি আবার উঠে দাঁড়ান, দানবিক চিৎকার করতে থাকেন এবং রাজকুমার ইউসুপভকে আক্রমণ করতে এগিয়ে যান। এই অবস্থায় রাজকুমার ঘাবড়ে গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতে শুরু করেন। রাস্পুতিন সিঁড়িতে হামাগুড়ি দিয়ে বন্য প্রাণীর মতো ইউসুপভকে ধাওয়া করেন। ইউসুপভ ওপরে উঠে দরজা বন্ধ করে দেন। রাস্পুতিন অমানবিক শক্তি প্রয়োগ করে দরজা খোলেন। তখন তাঁকে আবার গুলি করা হয় এবং লোহার রড দিয়ে মারাও হয়। এবার তিনি পড়ে যান। তখন তাঁকে বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়ার তোড়জোড় করা হচ্ছে যখন, তখন তিনি আবার জেগে ওঠেন। তিনি তাঁর একটি হাত ছাড়িয়ে নিয়ে শূন্যে ক্রস চিহ্ন আঁকতে শুরু করেন, কিন্তু শেষ করতে পারেন না। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
ঋণ: Reader's Digest