Categories
পুজোর খাতা ২০২৪ |

ওইঝা বোর্ড

119 |
Share
| ৭ অক্টোবর, ২০২৪
মৌলী কুন্ডু

চিত্রঋণ/ উইকিপিডিয়া

ঘটনাটা ঘটেছিল ভূতচতুর্দশীর রাতে। ভাগ্যের জোর না থাকলে হয়তো আরও বড় ক্ষতি হতে পারত। হয়তো আমরা সবাই শেষ হয়ে যেতে পারতাম।

ঘটনাটা তবে বলি, কালীপুজোর সপ্তাহখানেক আগে থেকেই আমরা মাসতুতো ভাইবোনেরা সবাই মামারবাড়িতে ভীড় জমাতাম। আমরা চার ভাই বোন। সবচেয়ে বড়ো বুবুনদাদার বয়স তখন চোদ্দ, তার থেকে এক বছরের ছোট গোরাদাদা, তারপর আমি টুটু আর আমার পর ছোট বোন দশ বছরের পাখি।

আমাদের মামারবাড়িটা ছিল গাছপালায়-ঘেরা ছিমছাম দোতলা বাড়ি।
দাদু নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাড়িটা তৈরি করেছিলেন। বছরের বিশেষ কিছু সময়ে যখন স্কুলের ছুটি পড়ত, তখন আমরা একত্রিত হতাম আমাদের প্রিয় মামারবাড়িতে।

আর মামা তো আরও বড় আকর্ষণ ছিল আমাদের কাছে। নানারকম অদ্ভুত জিনিস বিভিন্ন জায়গা থেকে জোগাড় করে আনা ছিল তার নেশা।
শুধু জিনিসগুলো জোগাড় করেই মামা খান্ত হত না, রীতিমতো তার ইতিহাসও জোগাড় করত। সেইসব ইতিহাসের গল্প শোনার জন্য আমরা চার ভাইবোন মুখিয়ে থাকতাম।

সেরকমই একবার মামা কালীপুজোর আগে জোগাড় করে আনল একটা ওইঝা বোর্ড। আমরা জিনিসটা দেখে মামাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এটা কিগো মামা?’
মামা বলল, ‘এটা কি জানিস ? একে বলে ওইঝা বোর্ড।’
বুবুনদা বলল, ‘এটা কি কোনো গেম? এরকম কোনো জিনিস তো আমরা আগে দেখিনি।’

মামা বিজ্ঞের হাসি হেসে বলল, ‘না এটা গেম নয়। তোরা প্ল্যানচেটের ব্যাপারে তো জানিস। সেই পদ্ধতি সবসময় সফল হয় না। কিন্তু এই ওইঝা বোর্ড সবসময় আত্মা নামানোর ক্ষেত্রে হান্ড্রেড পার্সেন্ট কাজ করে।’
গোরাদা বলল, ‘দারুন ব্যাপার তো। জিনিসটা তো দেখে মনে হচ্ছে খুব পুরনো। এর ইতিহাস নিশ্চয়ই তুমি জানতে পেরেছ, সেসব আমাদের বলো একটু।’

‘শোন তবে বলি—’ এই বলে গলাটা ঝেড়ে নিয়ে মামা বলতে শুরু করল, ‘ইতিহাস বলে, ১৮৮৬ সালে এলাইজা বন্ড নামের এক আমেরিকান প্রথম এই বোর্ড ডিজাইন করেন। কিন্তু চিনে এগারশো খ্রিষ্টপূর্বাব্দে সং ডাইনেস্ট্রির সময় থেকেই এই ধরনের বোর্ড ব্যবহার করা হত। আমেরিকার বোর্ড তৈরির ঘটনা তার অনেক পরে। রিচার্ড নামের এলাইজার এক বন্ধু এই বোর্ড তাকে তৈরি করে দিয়েছিল। রিচার্ড আসলে কফিন তৈরির কাজ করত। এলাইজা এই বোর্ড তৈরির পেটেন্ট করিয়েছিল ইলিশা নামের এক উকিলকে দিয়ে। পেটেন্ট করার সময় বোর্ডের কি নাম হবে তাও নাকি স্থির হয়েছিল আত্মার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। আমেরিকার মেরিল্যান্ডে ১৮৯০ সালে হেলেন পিটার্স নর্সওয়ার্থি নামের এক মিডিয়াম এই বোর্ডের নামটা জানতে পেরেছিলেন সেই আত্মার থেকে। সেই আত্মা ওইঝা শব্দের মানেও বলে দেয়। ওইঝা মানে ‘গুড লাক’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বোর্ডের চাহিদা প্রচুর বেড়ে যায়। তখন বহু মানুষ যুদ্ধে মারা যাওয়া তাদের প্রিয় আত্মীয়দের সাথে কথা বলতে চাইত।’

আমি বললাম, ‘মামা, তোমার এই বোর্ডটা কি আমেরিকায় তৈরি?’

‘না রে, এই বোর্ডটা আরো অনেক পুরনো। এটা কবে তৈরি হয়েছে তার সঠিক সময়কাল অবশ্য জানতে পারিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে অনেক চাইনিজ মানুষ কলকাতার ট্যাংরা অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। তাদের চামড়ার ব্যবসা ছিল। তারপর চামড়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তারা রেস্টুরেন্ট বিজনেস শুরু করে। এখন এই ব্যবসাও বন্ধ হয়ে আসছে। এরকমই এক রেস্টুরেন্টের মালিক ইউচি লিউইয়াং আমার বন্ধু। তার রেস্টুরেন্টও বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে সব কিছু বিক্রি করে সে ফিরে যাচ্ছে চিনে, নিজের দেশে। ও যখন জিনিসপত্র বিক্রি করার জন্য বার করছে আমি এই বোর্ডটা দেখতে পাই। ইউচিকে জিজ্ঞাসা করতে সে বোর্ডটা কী কাজে লাগে, জানাল। এটা নাকি বহু বছর ধরে তাদের পরিবারের সম্পত্তি। এমনকি যখন তারা চিনে হুনান অঞ্চলে থাকত তখনও বোর্ডটা তাদের কাছে ছিল। শেষবার তার এক দাদু বোর্ডটা ব্যবহার করেছিল। তখন কী যেন একটা ঝামেলা হয়! ইউচি তখন খুব ছোট, তাই ঠিক কী ঘটেছিল জানে না। এসব জিনিসের তো অনেকরকম অশুভ প্রভাব থাকে। তাই ওর ইচ্ছা ছিল এখান থেকে যাবার আগে সে জিনিসটা পুড়িয়ে নষ্ট করে দেবে। আমি তাই দেখে বললাম ওটা আমাকে দিয়ে দিতে। জিনিসটা নষ্ট করলেও, আমাকে ওটা দিতে ইউচি কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। আমি অনেক কষ্টে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওর থেকে এটা জোগাড় করি। দেবার আগে বারবার ও শুধু আমাকে একটাই কথা বলেছে, এটা যেন আমি ব্যবহার না করি। আমি ওকে কথা দিয়েছি, এটা শুধু নিজের সংগ্রহে রাখব। ব্যাবহার করব না।’

তখন বুবুনদা বলল, ‘আমরা এই বোর্ডটা দিয়ে আত্মাদের সাথে কন্টাক্ট করব না মামা?’

‘হ্যাঁ রে, সেটা আর বলতে! সেইজন্যই তো এতো কষ্ট করে জোগাড় করলাম। সাবধানে ব্যবহার করলে কোনো প্রবলেম হবে না।’
আমরা সবাই মিলে মামার মাথা খারাপ করে দিলাম, ‘কখন করব মামা, কখন করব?’

মামা বলল, ‘আজকের দিনটা খুব একটা সুবিধের নয়। আজ ভূতচতুর্দশী, মৃত আত্মারা আজকের দিনে পৃথিবীতে নেমে আসে। কোনো অশুভ আত্মা যদি নেমে আসে তাহলে তো কেলেঙ্কারি হবে রে।’
বুবুনদা বলল, ‘না মামা। আমরা যাকে ডাকব প্ল্যানচেট করে, সেই তো আসবে। অন্য কেউ কেন আসতে যাবে? আমাদের ক্ষতি করতে পারে এমন কাউকে আমরা ডাকব না। আর আত্মারা পৃথিবীর কাছাকাছি থাকলে তো খুব সুবিধেই হবে। ডাকলেই তাড়াতাড়ি চলে আসবে।’
‘না, ওইঝা বোর্ড দিয়ে যাকে ডাকা হবে সে আসবে এরকম ব্যাপার নয়। সে সময় কাছাকাছি যে আত্মা থাকে তারাই এই বোর্ডের মাধ্যমে মানুষের সাথে কনট্যাক্ট করে। এই বোর্ড ব্যবহার করার অনেক নিয়মও আছে। কোনো কবরস্থান বা শ্মশানে এই বোর্ড ব্যবহার করা যায় না। আর বোর্ড ব্যবহার করে যে আত্মাকে ডাকা হয়েছে তাকে অবশ্যই ফিরে যেতে বলতে হয়। ব্যবহার করা হয়ে গেলে বোর্ডটা কখনও খুলে রাখতে নেই। এবার ধর আত্মাদের ডাকার সময় আশপাশে যদি কোনো অশুভ আত্মা থাকে তাহলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া তো খুব মুশকিল হবে।’

গোরাদা বলল, ‘সে অশুভ আত্মা তো সবসময় থাকতে পারে। মামা আজই প্ল্যানচেট করি না আমরা। আমরা এখানে সবাই আছি আজ। খুব মজা হবে।’
সেইসময়ে আমাদের সবচেয়ে ছোট বোন পাখি বলে উঠল, ‘হ্যাঁ মামা আজই প্ল্যানচেট করো না—’
এতক্ষণ সে চুপচাপ আমাদের কথা শুনছিল। বয়সের তুলনায় একটু বেশি পাকা মেয়েটা। একবার কিছু বায়না ধরলে তাকে শান্ত করা খুব মুশকিল।
বুবুনদা বলে উঠল, ‘আমরা প্ল্যানচেট করলেও তোর তাতে কী? তুই পুঁচকি মেয়ে, এসব বড়দের ব্যাপারে তোকে নেওয়া হবে না।’
তখন পাখি জেদ করে কান্নাকাটি জুড়ে দিল, ‘আমি থাকব তোমাদের সাথে। আমি মোটেও বাচ্চা নয়।’
শেষ পর্যন্ত ওর জেদের কাছে আমাদের নতি স্বীকার করতে হল।
মামা বলল, ‘আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে, একটু রাত বাড়ুক। তারপর আমরা বসব সবাই মিলে।’

কথা মতোই কাজ হল। রাত দশটার সময় আমরা পাঁচজন বসলাম বোর্ডের সামনে একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে। বোর্ডটায় চাইনিজে কিছু শব্দ আছে। আর আছে বিভিন্ন রকমের চিহ্ন। মামা শব্দগুলো আর চিহ্নগুলো ইংলিশে কী হবে সেটা বুঝিয়ে দিল। বোর্ডের ওপর একটা তিনকোনা বস্তু আছে যেটার ওপরে আঙুল ছোঁয়াতে হয়। আত্মার সাথে যোগাযোগ হলে সেটা নড়ে ওঠে। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ কিংবা অক্ষরগুলোর ওপরে গিয়ে শব্দ গঠন করে উত্তর আসে। আমরা প্ল্যানচেটে বসার ঠিক একঘন্টা পড়ে বোর্ডের তিনকোনা বস্তুটা হঠাৎ নড়তে শুরু করল।
মামা বলে উঠল, ‘কেউ কি এসেছেন?’
বস্তুটা বোর্ডে ‘ইয়েস’-এ গিয়ে থামল। তারপর নিজে থেকেই কয়েকটা অক্ষরে গিয়ে থামতে লাগল।
মামা অক্ষরগুলো পরপর লিখে নিল। সেটা হল—‘We want blood’।
আমরা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লাম। তারপরেই ঘটল আসল ঘটনা। এমন একটা দৃশ্য দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করিনি। একটা গরম বাতাসের হল্কা আমাদের সকলকে ছুঁয়ে গেল। মোমবাতিটাও সঙ্গে সঙ্গে নিভে গেল। একটা তীব্র অন্ধকারে চারদিক ভরে যেতে থাকল। আমাদের সবার মাথা ভনভন করছিল। এক অজানা ভয়ে আমরা থরথর করে কাঁপতে লাগলাম। খুব জ্বর হলে মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা যেমন চলে যায়, আমাদেরও সেরকমই চিন্তা করার সব ক্ষমতা যেন উবে গেল। ঘরে হঠাৎ একটা হুটোপুটি আর মাংস পোড়ার গন্ধ। যেন খুব অশুভ কোনো শক্তি ঘরটা দখল করে নিয়েছে। ভয়ংকর একটা শক্তি প্রচণ্ড আক্রোশে আমাদের ছিন্নভিন্ন করে দিতে চাইছে। আমাদের নিশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে আসছে। আমরা সকলে কুলকুল করে ঘামতে লাগলাম, আর দম নেওয়ার জন্য খাবি খেতে লাগলাম। একটু হাওয়া, একটু আলো পেলে তখন আমরা বর্তে যাই।

ঠিক তখনই ঘরের দরজাটা খুলে গেল। দেখা গেল বারান্দায় চোদ্দটা প্রদীপ জ্বলছে। দিদিমা ভূতচতুর্দশী উপলক্ষে সন্ধ্যেবেলা ওগুলো জ্বেলেছিল। এখনো সেগুলো জ্বলছে। সেই প্রদীপের শিখা থেকে চোদ্দটা সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী যেন বেরিয়ে এল ঘুরতে ঘুরতে। সেই ধোঁয়া আমাদের ঘরটা ভরিয়ে দিল। মাংস-পোড়া গন্ধটা কেটে গিয়ে ঘরটা যেন ভরে গেল ধুনোর গন্ধে । আমরা সবাই মেঝেতে শুয়ে পড়েছিলাম। সবার বুকের ধুকপুকানি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলে, সবাই ঠিক আছে কিনা মামাই প্রথম উঠে দেখতে লাগল। কিন্তু পাখির কাছে গিয়ে চমকে উঠতে হল তাকে। পাখির শরীর ঠাণ্ডা। তাকে প্রথমে জাগানোর চেষ্টা করা হল, মুখে চোখে জল দিয়ে। কিছুতেই ওর জ্ঞান না ফেরায় ডাক্তার ডাকা হল। ডাক্তার বলেছিল অ্যাজমার জন্য দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে। কিন্তু তারপরেই পাখি উঠে বসল। আমরা ভেবেছিলাম সব ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু তারপরেই আসল ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম। পাখি পুরোপুরি বদলে গেছে। শুধু যে তার খাদ্যাভ্যাস, কথা বলার ঢং বদলেছে তাই নয় স্বভাবও বদলে গেছে। শুধু যে তার খাদ্যাভ্যাস, কথা বলার ঢং বদলে গেছিল তাই নয় স্বভাবেও বদল এসেছিল। সেই মিষ্টি, দয়ালু স্বভাবের মেয়েটা একটা ক্রুর, শয়তানে পরিণত হয়েছিল। মাংস ছাড়া তার মুখে আর কিছু উঠত না। কুকুর, বিড়াল বা কোনো পশু পাখিকে কষ্ট দেওয়া, সকলের ওপর চিৎকার করা, খারাপ ভাষা ব্যবহার করা— এসব তার প্রতিদিনের জীবনের অঙ্গ হয়ে পড়ে। এইসব কিছু কাটিয়ে উঠতে তার বহু বছর সময় লাগে। মেসোর বাড়ির কুলপুরোহিত এ ব্যাপারে অনেক সাহায্য করেছিলেন।

এই ঘটনার পর আমরা অনেকদিন একটা দুঃখের ঘোরে ছিলাম। মামাও বাড়ি ছেড়ে কোথায় কোথায় যেন ঘুরে বেড়াত। বেশ কয়েক বছর পর মামার সাথে দেখা হয়, দিদা মারা গেলে। আমরা সকলে আবার সেদিন মামারবাড়িতে জড়ো হয়েছিলাম, আমাদের ছোটো বোন পাখি তখন একেবারে সুস্থ। মামাকে একসময় একটু একা পেয়ে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম,
‘সেদিন ঠিক কি হয়েছিল বল তো মামা?’
আমার প্রশ্ন শুনে মামা অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল। বুঝলাম নিজের কষ্টটা সামলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। একটু নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে মামা বলল, ‘পাখির ওই ঘটনার পর আমি চারদিকে অনেক খোঁজ খবর করি। ইউচিকেও ফোন করেছিলাম। ও বলেছিল ওর দাদুর সাথেও এমন কিছু একটাই ঘটেছিল। যার জন্য বোর্ডটাকে ওরা অশুভ মনে করত। শুধু পরিবারের প্রাচীন ঐতিহ্য হিসেবে এতদিন ওটা রেখে দিয়েছিল।’
মামার গলা ভারী হয়ে আসে। তবে নিজেকে সামলে নিয়ে মামা আবার বলতে শুরু করে,‘ওইঝা বোর্ড ব্যবহারের একটা মূল নিয়ম হল, এটা কোনো কবরস্থানে ব্যবহার করা যাবে না। বাড়ির পুরনো কাগজপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে আমি একটা পুরনো দলিল পেয়েছি। তাতে দেখলাম বাবা আমাদের বাড়িটা যেখানে তৈরি করিয়েছিল সেখানে নবাবী আমলে একটা গোরস্থান ছিল। হয়তো সেই সব কবরের অশুভ আত্মরাই সেদিন এসেছিল।’
আমাদের এমন সুন্দর মামারবাড়ি একটা কবরস্থানের ওপর তৈরি! কথাটা শুনে খুব আশ্চর্য হলাম। আমার আর একটা প্রশ্ন ছিল। মামাকে জিজ্ঞেস করলাম,‘কিন্তু সেদিন সব ঠিক হল কী করে মামা?’
‘ঠিক হল আমাদের পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদে। মা সেদিন চোদ্দ প্রদীপ জ্বালিয়েছিল তাঁদের উদ্দেশ্যে। ওঁরাই আমাদের বাঁচিয়েছিলেন সেদিন। কিন্তু পাখি ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শিকার। তাই তার আত্মাকেই শয়তান গ্রাস করেছিল।’