Categories
প্রকৃতির ডাকঘর |

জলাভূমির সাতকাহন: ১

950 |
Share
| ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ডঃ সুস্মিতা সেন

ভূগোলের অধ্যাপিকা, শ্রীশিক্ষায়তন কলেজ

পূর্ব-কলকাতার জলাভূমি, চিত্র সৌজন্য: লেখিকা

জলাভূমি মানে ভূমির সঙ্গে জল। এই জলাজমির মধ্যে কোনও কোনওটা সবসময় জলে ডুবে থাকে, আবার কোনও কোনওটা একসময়ে জলের তলায় কিন্তু অন্যসময়ে জলের ওপরে ভেজা মাটি হয়ে বেরিয়ে পড়ে। এর কারণে নানান ধরনের ঘাস, লতাপাতা, গুল্ম এমনকী বড় গাছও জলাভূমিতে জন্মায় আর বেঁচে থাকতে পারে। আর এত রকম উদ্ভিদ থাকলে তো তার সঙ্গে নানান জীবজন্তুও থাকবে। ফলে বলা যেতে পারে যে জলাভূমি নানারকম উদ্ভিদ ও প্রাণীকে আশ্রয় দেয়। এই কারণেই জলাভূমি আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের একটা খুব দরকারি অংশ। আর এই জন্যেই একে বাঁচিয়ে রাখা খুব দরকার। তবে জলাভূমি যে শুধু এই কারণেই প্রয়োজন তা নয়। এটা আরও অনেক কাজ করে যা আমরা চোখে দেখতে পাই না, যেমন ঝড় আটকায়, মাটির তলার জলকে বাড়ায় আর আরও কত কিছু।

জলাভূমির এত গুরুত্ব বুঝতে পেরে সারা পৃথিবীতে বহু দেশ তাদের নিজেদের জলাভূমি বাঁচানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আর এই ব্যপারে নেতৃত্ব দিচ্ছে একটা সংস্থা যার নাম র‍্যামসার কনভেনশন (Ramsar Convention on Wetlands of International Importance especially as Waterfowl Habitat)। জলাভূমি সংক্রান্ত সবরকম আলোচনার জায়গা এই র‍্যামসার কনভেনশন। তাই অনেক দেশই তাদের নিজেদের জলাভূমি বাঁচানোর জন্য এর সাথে যুক্ত থাকতে চায়। এখন অবধি ১৭০টা দেশ র‍্যামসার কনভেনশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রায় সব মিলিয়ে ২৩৯৪টা জলাভূমি বাঁচানোর জন্য। ১৯৮২ সালে আমাদের ভারতবর্ষ এই র‍্যামসার কনভেনশনের সাথে যুক্ত হয়। আমাদের দেশের ৩৭টা গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমিকে বাঁচানোর জন্য র‍্যামসারের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পৃথিবীর ২০০০টা জলাভূমির মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড় হল পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন জলাভূমি। এছাড়া কেরালার ভেমবানাদ-কোল ও উড়িষ্যার চিলকা হ্রদও খুব বড় জলাভূমি যা র‍্যামসার তালিকায় আছে। সুন্দরবন ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব-কলকাতার জলাভূমিও র‍্যামসার তালিকাভুক্ত।

ঋণ: www.ramsar.org